নিয়মানুবর্তিতা
নিয়মানুবর্তিতা
ভূমিকা : ল্যাটিন শব্দ 'discipulus' শব্দ থেকে 'discipline' শব্দটি এসেছে, যার অর্থ অনুসারী। একজন অনুসারী বিনা প্রশ্নে তার বড়দের কথা মান্য করে। কাজেই নিয়মানুবর্তিতা বলতে বুঝায় আইন কিংবা নিয়মমাফিক জীবনকে পরিচালনা করতে মনকে তৈরি করা ।
চিরন্তন আইন : পৃথিবীর সর্বত্র নিয়মানুবর্তিতা অনুসরণ করা হয়। সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহ, নক্ষত্র এবং ধূমকেতু নিয়মমাফিক চলাচল করে। নিয়ম ব্যতীত এদের একটির সাথে অন্যটির সংঘর্ষ হবে এবং এগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। সাগরে জোয়ার-ভাঁটাও নির্দিষ্ট নিয়মে হয়ে থাকে। শরীরে রক্ত সঞ্চালন এবং হজমক্রিয়াও নির্দিষ্ট নিয়মেই সম্পন্ন হয়। প্রকৃতিতে সবকিছু একটি সুন্দর নিয়মেই চলে ।
ব্যক্তিজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : নিয়মানুবর্তিতা অর্থ শান্তি এবং উন্নতি এবং বিশৃঙ্খলা, অশান্তি এবং অসম্মান। কাজেই স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বাড়ি, কারখানা এবং অফিস সর্বত্রই নিয়মানুবর্তিতা দরকার। নিয়মানুবর্তিতা অনুসরণ করে পিতামাতা তার সন্তানদেরকে লালন পালন করে আর সন্তানও নিয়মানুবর্তিতা অনুসরণ করে তার পিতামাতাকে মান্য করে।
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা না থাকলে সেগুলো চলতে পারে না। একজন শিক্ষক ঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারে না যদি ছাত্ররা গোলমাল করে কিংবা শিক্ষক যা বলে ছাত্ররা যদি তা না শুনে। অফিস কিংবা কলকারখানায় প্রত্যেকেই তার বড়দের মান্য করা উচিত অন্যথায় আইনের অনুপস্থিতি দেখা যাবে।
খেলাধুলা : খেলাধুলায় আমরা সর্বত্র নিয়মানুবর্তিতার চর্চা দেখতে পাই। খেলার মাঠে রেফারি কিংবা আম্পায়ারই সর্বেসর্বা। খেলোয়াড়দের তার কথামত চলতে এবং খেলার নিয়ম শৃঙ্খলা মানতে হবে।
সেনাবাহিনী : সেনাবাহিনীতে নিয়মানুবর্তিতা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। সেনাবাহিনীর প্রত্যেকে শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপন করে। যুদ্ধক্ষেত্রে শৃংখলা অবশ্যই থাকতে হবে। সৈন্যদেরকে সেনাপতির আদেশ পুরোপুরি মানতে হবে।
উপসংহার : মোদ্দাকথা বলা যায়, খেলার মাঠ থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দান পর্যন্ত সর্বত্রই নিয়মানুবর্তিতা অপরিহার্য। মানবজীবনকে যে সমস্ত গুণাবলি সুন্দর করে তার মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা অন্যতম। পৃথিবীকে শান্তিময় করার জন্য এবং জীবনে সফল হতে আমাদের ব্যক্তিজীবনে নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলা অবশ্যই কর্তব্য।