তওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমে নামাজ এবং দুয়া
তওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমে নামাজ
১। তওয়াফ শেষ করে মাকামে ইব্রাহীমের পেছনে গিয়ে ২ রাকা‘আত‘ওয়াজিবুত তওয়াফ’ নামাজ আদায় করতে হবে। এ নামাজের নির্দেশটি স্বয়ং আল্লহ্ কুরআন শরীফে দিয়েছেন, আয়াতটি
অর্থঃ ‘তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাও।’ (সূরা বাকারা-১২৫ নং আয়াত)। মনে মনে নামাজের নিয়তঃ ‘হে আল্লহ্! আমি দুই রাকাআ’ত ‘ওয়াজিবুত তওয়াফ’ নামাজের নিয়ত করলাম।’ ভিড়ের জন্য এ নামাজ খুব ছোট সূরা দিয়ে আদায় করা শ্রেয় (সূরা কাফিরুন ও সূরা ইখলাছ দিয়ে পড়া উত্তম)।
২। এ নামাজ মাকামে ইব্রাহীমের যত নিকটে পড়া যায়, ততই ভাল লাগে। কিন্তু হজ্বের সময় মাকামে ইব্রাহীমের নিকটে নামাজের জন্য স্থান পাওয়া খুবই কঠিন। তাছাড়া মাকামে ইব্রাহীমের সন্নিকটে নামাজে দাঁড়ালে অন্যান্য তওয়াফকারীরা বাধাগ্রস্ত হন। তাই মাকামে ইব্রাহীম থেকে অনেক পেছনে গিয়ে অথবা মাসজিদুল হারামের ভেতরে যে কোনো সুবিধাজনক স্থানে এ নামাজ আদায় করা যায়।
অতি দুঃখের বিষয় যে, কিছু কিছু হাজীগণ অন্যকে কষ্ট দিয়ে মাকামে ইব্রাহীমের অতি নিকটে নামাজ শুরু করে দেন। এ সময় তাঁর সাথীরা তাকে ঘেরাও দিয়ে রাখেন। এতে অন্য তওয়াফকারীরা বাধাগ্রস্ত হয় ফলে তাঁদের গতি রোধ হয়ে যায়। এটা নিঃসন্দেহে একটি গর্হিত কাজ।
৩। এ দু’রাকা‘আত নামাজ শেষ করে সম্ভব হলে সেখানে বসেই অথবা দাঁড়িয়ে দুআ’-মুনাজাত করুন। হজ্বের সময় ব্যতীত অন্য সময় নামাজ/দুআ’ সব কিছু মাকামে ইব্রাহীমের খুব কাছেই সম্পন্ন করা যায়।
৪। মাকামে ইব্রাহীমের নামাজ শেষ করে যমযমের পানি পান করা এবং পুনরায় হাজরে আস্ওয়াদকে ইছতিলাম করা সুন্নাত। কিন্তু বর্তমানে হজ্বের সময় এ আ’মলটি করা অসম্ভব। এমনকি বছরের অন্য সময়ে উমরাহ করার সময়েও ভিড়ের জন্য এ আ’মলটি করা যায় না। এ আ’মলটি করতে না পারলে অবশ্য কোনো গুনাহ্ হবে না। যাহোক, দূর থেকে হাতের ইশারায় এ আ’মলটি করবেন।
মাকামে ইব্রাহীমের দুআ’
অবস্থা বুঝে মাকামে ইব্রাহীমের নিকটে অথবা দূরে বসে/দাঁড়িয়ে এ দুআ’টি করতে পারেন। এটি বাধ্যতামূলক নয়। তবে এটি খুব সুন্দর একটি দুআ’।
‘হে আল্লহ্! আমার অন্তর ও বাহির দুই’ই তুমি জানো, কাজেই আমার অনুশোচনা কবুল করো। তুমি জানো আমার অভাব, কাজেই পূরণ করো আমার প্রার্থনা। তুমি জানো আমার মনের কথা, কাজেই ক্ষমা কর আমার গুনাহ্। হে আল্লহ্! তোমার কাছে চাই এমন ঈমান, যা অন্তরে গেঁথে থাকবে। চাই দৃঢ় একীন যেন বুঝতে পারি যে, আমার ভাল মন্দ সব তোমারই ইচ্ছায় হচ্ছে। চাই পূর্ণ সন্তুষ্টি তোমার দেওয়া কিস্মতে/ভাগ্যে। তুমি আমার বন্ধু দুনিয়া এবং আখিরাতে। মৃত্যু দিও আমাকে মুসলমান হিসাবে, দাখিল করো আমাকে নেক বান্দাদের দলে।
হে আল্লহ্! আমার একটি গুনাহ্ও যেন ক্ষমার বাকি না থাকে। আর আমার সব মুশ্কিল আছান করে দাও, সকল প্রয়োজন মিটিয়ে দাও। আমার কাজকে সহজ করে দাও, অন্তরকে খুলে দাও, আলোকিত করে দাও আত্মাকে এবং আমার সকল আমলকে নেক্ আমলে পরিণত করে দাও।
হে বিশ্ব প্রতিপালক, তোমার রহমতো বর্ষিত হোক তোমার বন্ধু মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর এবং তার বংশধরদের উপর। আমীন।’