কখন এবং কোথায় ইহরাম বাঁধবেন? হজ্ব সফরের ব্যাপকতা
কখন এবং কোথায় ইহরাম বাঁধবেন?
এখানে উল্লেখ্য যে, আপনি যদি প্রথমে সরাসরি মদীনা শরীফ যাওয়ার নিয়ত করেন, তাহলে নিজ বাড়ী/হাজীক্যাম্প থেকে ইহরাম বাঁধতে হবে না। অর্থাৎ নিজ বাড়ী/ঢাকা থেকে মদীনা শরীফ পর্যন্ত সাধারণ পোশাক পরেই সফর করবেন এবং স্বাভাবিক সকল ইবাদাত বন্দেগী চালাবেন। কিন্তু যদি আপনি প্রথমে মক্কা শরীফ যাওয়ার নিয়ত করেন, তাহলে আপনাকে নিজ বাড়ী / হাজী ক্যাম্প / ঢাকা বিমান বন্দর অথবা মীকাত অতিক্রম করার পূর্বেই প্লেনের ভেতরেই ইহরাম বেঁধে ইহরাম অবস্থায় সফর করতে হবে এবং মক্কা শরীফে পৌঁছে প্রথমেই উমরাহ সম্পন্ন করে ইহরাম মুক্ত হতে হবে (যদি তামাত্তু হজ্ব করেন)। আমার বিবেচনায় প্রথমে মক্কা শরীফে গিয়ে উমরাহ সম্পন্ন করে মদীনা শরীফে যাওয়াই উত্তম। ইহরাম সংক্রান্ত সকল জরুরী মাসলামাসায়েল এই সাইটে ইহরাম অধ্যায়ের পোস্টে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হজ্ব/উমরাহ্ পালনের জন্য ইহরাম বাঁধা অতীব জরুরী বিষয়, তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ইহ্রামের সকল মাসআলা-মাসায়েল জানতে হবে।
হজ্ব সফরের ব্যাপকতাঃ
হজ্বের সফর আপনার সারা জীবনের কাঙ্খিত, পরম চাওয়া-পাওয়ার, মহা আনন্দের, কষ্টসাধ্য এবং ব্যস্ততম একটি সফর। সম্পূর্ণ সফরে আপনাকে অনেক হাঁটাহাঁটি, দৌড়াদৌড়ি করতে হবে এবং সর্বদা ব্যতি-ব্যস্ত থাকতে হবে। এ সফরের ব্যাপকতা:-
(১) নিজ বাড়ী থেকে শুরু করে ঢাকায় হাজী ক্যাম্প অথবা বিমান বন্দর।
(২) ঢাকা থেকে জেদ্দা, জেদ্দা থেকে মক্কা অথবা ঢাকা থেকে সরাসরি মদীনা অথবা ঢাকা থেকে জেদ্দা হয়ে মদীনা।
(৩) এরপর মক্কা থেকে মীনা অথবা মদীনা থেকে মক্কা হয়ে মীনা।
(৪) এরপর মীনা থেকে আরাফাহ্, আরাফাহ্ থেকে মুযদালিফা, মুযদালিফা থেকে মীনা।
(৫) এরপর মীনা থেকে মক্কা (ফরজ তওয়াফ ও ওয়াজিব সায়ী করার জন্য) এবং মক্কা থেকে মীনার তাঁবুতে ফেরত।
(৬) ১২/১৩ তারিখে মীনা থেকে মক্কায় ফেরত।
(৭) মক্কা থেকে জেদ্দা হয়ে ঢাকা অথবা মক্কা থেকে মদীনা এবং মদীনার পর্ব শেষ করে জেদ্দা হয়ে অথবা মদীনা থেকে সরাসরি ঢাকা ফেরত।
(৮) ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে পৌঁছা পর্যন্ত এ সফর ব্যাপৃত।
১৪। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন/যিয়ারত, হাটে বাজারে কেনা-কাটা, ঘোরা-ফেরা, প্রতিদিন মক্কা-মদীনায় ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাআ’তের সাথে আদায়ের জন্য দৌড়াদৌড়ি, আল্লহর ঘর বেশী বেশী তওয়াফ করা এবং সাফা-মারওয়া সায়ী করার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা-
- এক কথায় সকল কার্যক্রম বিধি বিধান অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে এবং সুচারুরূপে পালন করতে হলে- পুরো সফরে আপনার জন্য কোনো অবসর/ বিরতি / বিশ্রাম নেই। তাই যে ব্যক্তি যত বেশী প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন, তিনি তত সহজ ভাবে হজ্বব্রত পালন করে নিস্পাপ হয়ে বাড়ীতে ফিরতে পারবেন, ইন্শাআল্লহ্। অবশ্য কেউ যদি উমরাহ্ ও হজ্বের সফরকে এবং সকল কার্যক্রমকে অতি স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন নামাজ আদায় ও ইবাদাত বন্দেগীর মতো মনে করেন, তাহলে সেটা আলাদা কথা। আর যদি কেউ এটাকে জীবনের চরম চাওয়া-পাওয়া তথা পরকালের কামিয়াবী মনে করেন, তাহলে এ সফর অবশ্যই অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও কষ্টসাধ্য।