হজ্ব করার উদ্দেশ্য কি? হজ্বের উদ্দেশ্য হাসিলের উপায়সমূহ।
হজ্ব করার উদ্দেশ্য কি ? প্রধানত: ৩টি উদ্দেশ্যঃ-
- (১) ফরজ হুকুম পালন করা।
- (২) জান্নাত অর্জন করা।
- (৩) শিশুর মতো নিঃস্পাপ হওয়া
তাছাড়াঃ- নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অর্জন করাও হজ্বের উদ্দেশ্য:-
ক। আল্লহর অকাট্য হুকুম পালন করে আল্লহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
খ। আল্লহর ভয়, ভালোবাসা ও ভক্তিতে নিজেকে বিলীন করা।
গ। আল্লহর হুকুম পালনের মাধ্যমে সারা জীবনের পুঞ্জীভূত গুনাহ্সমূহ মাফ করিয়ে নিষ্পাপ হওয়া।
ঘ। রসূল (সঃ) এর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা বিশ্বাস ও আনুগত্য পরিপূর্ণ করা।
ঙ। আল্লহর অশেষ অনুগ্রহ ও ক্ষমা অর্জন করা।
চ। ইসলামী ঐতিহ্যের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সমূহ স্বচক্ষে পরিদর্শন করে আল্লহ্ ও রসূল (সঃ) এর উপর বিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করা।
ছ। মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তম মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করে মুসলিম উম্মাহর জন্য কিছু অবদান রাখা।
জ। সর্বোপরি চিরস্থায়ী কল্যাণের স্থান জান্নাত অর্জন করার সুযোগ গ্রহণ করা।
ঝ। হজ্জে মাবরুর হাসিল করতে হলে সূরা:বাকারা, আলে ইমরান, মায়িদা, তাওবা এবং হজ্জ-এ নির্দেশিত সকল হুকুম অনুযায়ী হজ্ব করতে হবে।
৭। হজ্বের উদ্দেশ্য হাসিলের উপায়ঃ
ক। কঠোর সাধনা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে হজ্বের মাসলা-মাসায়েল জেনে শিখে সুচারুরূপে হজ্বের সকল কার্যক্রম সম্পাদন করা।
খ। আল্লহর নিকট কায়মনো বাক্যে আত্মসমর্পণ করে আল্লহর নিকট আহাযারী ও কান্নাকাটির মাধ্যমে ক্ষমা অর্জন করা।
গ। সুতরাং হজ্বের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নিম্নলিখিত কাজ/আ’মলগুলো করতে হবেঃ-
(১) সফরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি দুআ’ কবুলের স্থানে মন-প্রাণ ভরে কান্নাকাটি করে আল্লহর নিকট দুআ’ করতে হবে।
২) আপনার গুনাহ্সমূহ আপনাকেই মাফ করাতে হবে। অতএব কাঁদতে গিয়ে অন্যের জন্য লজ্জা পেলে চলবে না।
৩) এতিম-অসহায় ছেলে-মেয়েদের মতো এবং ক্ষুধাতাড়িত ভূখা-কাঙ্গালের মতো কাঁদতে হবে।
৪) নিজের সারা জীবনের সকল অপরাধ ও নাফরমানির জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়ে চরম অপরাধীর মতো কাঁদতে হবে।
৫) এককথায়, মাগফিরাত ও নাযাত পেতে হলে কান্না-ই একমাত্র উপায়। মনে রাখতে হবে কান্না-ই মনকে নরম করে এবং কান্না-ই দুআ’ কবুলের লক্ষণ।
৬) আমাদের প্রিয় রসূল (সঃ) উম্মতের নাযাতের জন্য কেঁদেছেন, সারা জীবন কেঁদেছেন, কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন।
৭) অতএব, আমরা কেন কাঁদতে পারবো না এবং কেঁদে কেঁদে আল্লহর দয়া ও করুণা হাসিল করতে পারবো না ?
৮) আল্লহর দয়া ও করুণা পেতে হলে এবং রসূল (সঃ) এর সুপারিশ আশা করলে কান্না ছাড়া কোনো উপায় নেই।
৯) সুতরাং কি কি ইবাদাত ও কিভাবে আ’মল করলে মন নরম হবে এবং কান্না আসবে- সে ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করুন।
১০) চোখের পানি দিয়ে বুক ভাসাতে হবে এবং আরাফার তপ্ত বালু ভেজাতে হবে- তবেই দুআ’ কবুলের আশা করতে পারেন।
১১) গুনাহ্ করতে করতে আমাদের অন্তর পাষাণ হয়ে গেছে, তাই সহজে আমাদের কান্না আসে না। মনকে নরম করার জন্য হজ্বের ব্যাপারে ভালো ভালো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে, তাহলে মনের মধ্যে অনুভ‚তি জাগ্রত হবে এবং কান্না আসবে।
১২) গতানুগতিকভাবে হজ্ব করতে গেলে মনও নরম হবে না, কান্নাও আসবে না, তথা হজ্ব কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না।
১৩) দলবদ্ধভাবে আমরা সাধারণত যেভাবে হজ্ব করি, তাতে আমাদের মাটির দেহটাই হজ্ব করে আসবে, অন্তরের হজ্ব হবে না।
...।।